গরমে সুস্থ থাকতে ডাবের পানির ১০টি গুণাগুণ
গরমে সুস্থ থাকতে ডাবের পানির ১০টি গুণাগুণ সম্পর্কে নীচের পোস্ট এ উল্লেখ করা হল। এই গরমে সুস্থ থাকতে ডাবের পানি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা প্রতিদিন না পারলেও সপ্তাহে অন্তত ২ গ্লাস ডাবের পানি খেতে পারি।
অতিরিক্ত গরমে শরীর যখন ক্লান্ত তখন ডাবের পানি খুব দ্রুত প্রশান্তি এনে দিতে পারে। এতে কোনো কৃত্রিম রং, প্রিজারভেটিভ বা ফ্লেবার এইগুলো থাকে না। শরীরের পানির অভাব পূরণ করতে ও খনিজ পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।সূচিপত্রঃ গরমে সুস্থ থাকতে ডাবের পানির গুণাগুণ
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
- খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা
- ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
- ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে
- ডাব খেলে কি গ্যাস হয়
- ডাবের পানির কিছু অপকারিতা
- পানিশূন্যতা কমাতে ডাবের পানি
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডাবের পানির উপকারিতা
- খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা
গরমে সুস্থ থাকতে এবং তেষ্টা মেটাতে কোমল পানীয় থেকে ডাবের পানি পান করা ভালো। তবে ডাবের পানি অবশ্যই প্রাকৃতিক টা ভালো বোতলজাত বা কোনো ব্র্যান্ডের ডাবের পানি পান করা একদমই উচিত নয়। আমাদের দেশে খুব একটা বোতলজাত ডাবের পানি না থাকলেও অন্যান্য দেশে এটি খুবই সাধারণ একটি বিষয়।
বছরের পর বছর ধরে নারিকেল বা ডাবের পানির ব্র্যান্ডগুলো হাইড্রেশন বা তেষ্টা নিবারণের কথা বলে যাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ লিজি স্টাইট সতর্ক করে দিয়েছেন পুস্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট। ইট দিস, নট দ্যাট ওয়েবসাইট এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই পুষ্টিবিদ ডাবের পানির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেন, এটা প্রাকৃতিক খনিজের উৎস যা আদ্রতা যোগায়।
প্রাকৃতিক ডাবের পানিতে আছে সোডিয়াম , ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। এগুলো ইলেক্ট্রোলাইট এর কাজ করে এবং দেহের তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়তা করে বলে জানান স্টাইট। অতিরিক্ত গরমে শরীর যখন ক্লান্ত তখন ডাবের পানি খুব দ্রুত প্রশান্তি এনে দিতে পারে। এতে কোনো কৃত্রিম রং, প্রিজারভেটিভ বা ফ্লেবার এইগুলো থাকে না।
শরীরের পানির অভাব পূরণ করতে ও খনিজ পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। ডাবের পানি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। অন্যান্য ফলের রসের তুলনায় ডাবের পানিতে কম কেলারি ও কম সুগার থাকে। যা ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য যারা ডায়েট করছেন তারা ডাবের পানি খেতে পারেন এতে ভালো ফলাফল পাবেন।
গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
গর্ভবতী মায়েদের নিজের ও সন্তানের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে মনোযোগী হতে হয়। এই সময়ে খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রেও অনেকটা সচেতন হতে হয়। গর্ভাবস্থায় নারীদের খাবারের ডায়েট এ একাধিক বিষয়কে শামিল করা হয়। এর একটি হচ্ছে ডাবের পানি। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, মেগনেশিয়া, ও ক্লোরাইড। বলা যায় গর্ভবতী নারীদের জন্য গর্ভধারণের তৃতীয় মাস থেকেই ডাবের পানি পান করা উচিত।
ডাবের পানি পান করলে শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে। ফলে এটি মা এবং শিশু দুজনের জন্যই ভালো। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন এক গ্লাস করে ডাবের পানিই যথেষ্ট। এই সময় সকালে উঠল খানিকটা দুর্বল লাগে এইটা থেকে রক্ষা পেতে ডাবের পানি খুবই উপকারী। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দেয় সেই ক্ষেত্রে পানিস্বল্পতা এড়াতে ডাবের পানি এই সময় খুবই কার্যকরী।
পানিশূন্যতা কমাতে ডাবের পানি
গর্ভাবস্থায় পানিশূন্যতা সমস্যাটি খুব বেশি দেখা যায়। এই সময় একদমই পানিশূন্যতা হওয়া যাবে না। এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। ডাবের পানি পান করলে এই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। তাই গর্ভাবস্থায় পানিশূন্যতা দুর করতে ডাবের পানি পান করা খুবই কার্যকরী।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডাবের পানির উপকারিতা
নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কারণ এতে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। এছাড়াও ডাবের পানি মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধ করতেও অনেক বেশি সহায়তা করে থাকে।
খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা
সকালে ডাবের পানি খেলে খালি পেটে খাবেন সবসময়। ঘুম থেকে উঠেই আমরা চায়ের কাপে চুমুক দেয়। কিন্তু এইটার পরিবর্তে আমরা যদি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার পরে খালি পেটে ১ গ্লাস ডাবের পানি পান করি তাহলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে। কারণ এতে রয়েছে লরিক অ্যাসিড যা নানা ধরনের রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
আর ডাবের পানি সকালে খেলে আপনার সারাটাদিন চনমেনে থাকবে শরীর। এছাড়াও আমাদের শরীরকে ভেতর থেকে আদ্র রাখা খুবই জরুরি। কারণ শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পরে এবং শরীরে বিভিন্ন প্রকার এর সমস্যাও দেখা দেয়। তাই নিয়মিত ডাবের পানি পান করা জরুরি। এটি আপনার শরীর আদ্র রাখতে সাহায্য করবে।
আর এই প্রচণ্ড গরমে উষ্ণতার পারদ চড়তে শুরু করেছে। গরমে একটু আরাম এনে দিতে ডাবের পানির কোনো বিকল্প নেই। তবে শুধু তেষ্টা মেটাতেই নয়, গরমে শরীর ভালো রাখতেও ডাবের পানি অনেক উপকারী। আর খালি পেটে ডাবের পানি খেলে এর গুণ মেলে বেশি। অতএব প্রতিদিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে ডাবের পানি পান করা অবশ্যই অত্যাবশ্যকীয়।
ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম
ডাবের পানি স্বাভাবিকভাবে পান করার ছাড়াও দৈনিক খাবারের সাথে বিভিন্নভাবে যোগ করা যাই সহজ ও কার্যকর উপায়ে ডাবের পানি পান করতে চাইলে চুমুক দিয়েই পান করতে হবে। তাজা কচি ডাব বাজারে কিনতে পাওয়া যায় ডাব কেটে এর পানি ও শাঁস গ্রহণ করার মাধ্যমে ডাবের আসল স্বাদা ইলেক্ট্রোলাইট-সহ পুষ্টি উপাদান সহজেই পাওয়া যায়।
ডাবের পানি তো আমরা সকলেই গ্রহণ করি কমবেশি কিন্তু আমরা কি এটা সকলে জানি যে তাদের পানি খাওয়ার নিয়ম কি এবং কোন নিয়ম অনুযায়ী খেলে এটি উপকারে আসবে আর কোন নিয়ম অনুযায়ী যদি এটি খায় তাহলে এটি আমাদের ক্ষতি করে ফেলবে হয়তো বা জানে থাকতেও পারেন তবে আমার মনে হয় আপনাদের ভেতরে অধিকাংশ মানুষ জানে না তবে ডাবের পানি খাওয়ার ও কিছু সময় বা নিয়ম আছে।
ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে
শরীর ডিহাইড্রেশন রোধ শরীরে ইমিউনিটি তৈরি করা সহ নানান উপকারিতায় রয়েছে এই ডাবের পানির মধ্যে। প্রেসারকে বলা হয় নীরব ঘাতক। অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন, সঠিক খাদ্যাভাসের অভাবে প্রসার হয়। প্রেসারের পরিণাম ভয়াবহ। প্রেসারের কারণে হার্টফেল, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। যেকোন বয়সের মানুষের প্রেসার হতে পারে। যারা প্রেসার / রক্তচাপ নিয়ে চিন্তিত তারা রোজ ডাবের পানি খান। কেননা, ডাবের পানি প্রেসার / রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।
ডাবের পানি থেকে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি পাওয়া যায়। তাছাড়া ইহা ডিহাইড্রেশনের রোধ, হজমশক্তি শক্তি বৃদ্ধি, অ্যাসিডিটির হাত থেকে শরীরকে সুস্থ রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে, ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ডাবের পানি বড় নিয়ামত, ডাবের পানিতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান ফাইবার যা শরীরে পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখে, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও ডাবের পানি ভীষণ উপকারী। তাহলে এখন নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন ডাবের পানি আপনার শরীরের জন্য কতটা উপকারী। অতয়েব ডাবের পানি প্রতিদিন পান করা প্রয়োজন আমাদের জন্য।
জানলে অবাক হবেন, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে ডাবের জল বেশ কার্যকরী। কারণ এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি রয়েছে। আর এই সব উপাদান ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
ডাব খেলে কি গ্যাস হয়
খাদ্যাভ্যাসে একটু অনিয়মের কারণে পেটে গ্যাসের সমস্যায় ভুগতে হতে পারে। এক্ষেত্রে নিয়মিত কলা, ডাবের পানি ও ঠাণ্ডা দুধ বেশ উপকারী। ডাবের পানি প্রাকৃতিক এই পানীয়তে আছে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কারক উপাদান। তাছাড়া ডাবের পানি ঠাণ্ডা তাই পেটের জন্যও ভালো। নিয়মিত ডাবের পানি খেলে গ্যাসে পেট ফুলে থাকার সমস্যা কমে আসবে। ডাবের পানি খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়। antioxidant ভরপুর এটি। উপকারি মিনারেলসও রয়েছে।
ডাবের পানির অপকারিতা
ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। প্রতিটি বিষয়ের কিছু ভালো দিক আবার কিছু মন্দ দিকও রয়েছ। ডাবের পানিও এর ব্যতিক্রম নয়। নিচে ডাবের পানির অপকারিতা গুলি আলোচনা করা হলো
ডাবের পানিতে উচ্চ মাত্রার পটাশিয়াম রয়েছে যার কারণে কিডনি রোগী বা যারা দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন, যাদের ডায়ালাইসিস চলছে এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি গ্রহণ করা যাবে না। কারণ এতে থাকা পটাশিয়াম কিডনি নেফ্রাইটিস এর উপর পটাশিয়াম জমা হয়ে আরো চাপ বাড়বে। যার ফলে শরীর হতে বর্জ্য পদার্থ গুলি নিষ্কাশনে বাধা প্রাপ্ত হবে।
অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার কারণে কারো ডায়রিয়াও হয়ে যেতে পারে। যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডাবের পানি খাবেন কারণ এতে সর্দি বা ঠান্ডার রোগ আছে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
গরমে সুস্থ থাকতে ডাবের পানির গুণাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত সব ওপরের পোস্ট এর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা, খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা, ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম, ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে, ডাব খেলে কি গ্যাস হয়, ডাবের পানির কিছু অপকারিতা এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url